1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

পশ্চিমবাংলায় আব্বাস সিদ্দিকির পাশে থেকেই কাজ করবে মিম, জানিয়ে দিলেন আসাদউদ্দিন ওয়াইসি

  • Update Time : রবিবার, ৩ জানুয়ারী, ২০২১
  • ১৮২ Time View

বিশেষ সংবাদদাতা,কলকাতা : পশ্চিমবঙ্গে ‌‌বিধানসভা নির্বাচন মে মাসে। তার ঠিক পাঁচ মাস আগেই রাজ্যে পৌঁছে গেলেন মিম নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। রবিবার সকালে তিনি ফুরফুরা শরিফে পৌঁছে যান। বৈঠক করেন পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে। যদিও বিষয়টিকে গুরুত্বহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। বিজেপিও মিম প্রধানের এই সফরকে তেমন গুরুত্ব দিতে নারাজ।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি বিহার বিধানসভা নির্বাচনে ৫টি আসনে জিতেছে মিম। তার পরই মিম প্রধান আসাদউদ্দিন জানিয়ে দেন, পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে অধিকাংশ আসনেই প্রার্থী দেবেন তাঁরা। তবে টার্গেট হবে রাজ্যের মুসলিম অধ্যুষিত আসনগুলিই। এর মধ্যে রাজ্যে একটি ঘটনা ঘটে যায়। বিষয়টি নিয়ে সতর্ক হয়ে যায় তৃণমূল। তাদের উদ্যোগে মিম কর্মী–সমর্থকদের একটা বড় অংশ ওই দলে যোগ দিয়েছেন। তাই আসাদউদ্দিনের বাংলা সফরকে গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজ্যের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

রবিবার সকালে ফুরফুরা শরিফে পৌঁছন আসাদউদ্দিন। তাঁকে স্বাগত জানান আব্বাস সিদ্দিকি। শুধু তাই নয়, আসাদউদ্দিনকে সম্পূর্ণ ফুরফুরা শরিফ ঘুরিয়ে দেখান আব্বাস সিদ্দিকি। এর পর দু’জনের মধ্যে একটি গোপন বৈঠক হয়। তবে বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে, সে ব্যাপারে দু’জনের কেউই মুখ খোলেননি। মনে করা হচ্ছে, আগামী বিধানসভা ভোটের রণকৌশল নিয়ে দু’জনের আলোচনা হয়েছে। তবে এদিন বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কিছু কথা বলেন আসাদউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘বাংলায় মিমের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এই রাজ্যে আব্বাস সিদ্দিকির পাশে থেকেই কাজ করবে মিম। যে কাজ সিদ্দিকি করছেন তা ঐতিহাসিক। রাজ্যে তাঁর নেতৃত্বেই আমরা মিমকে এগিয়ে নিয়ে যাব। বাংলায় মিমের ক্ষেত্রে তিনিই শেষ কথা।’ মুখে বৈঠক নিয়ে বিস্তারিত কিছু না বললেও সেই বৈঠকের ছবি কিন্তু টুইট করেছেন আসাদউদ্দিন। কী উদ্দেশ্যে তিনি বৈঠকের আলোচনা গোপন রেখে ছবিটি টুইট করলেন, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

এর আগে আসাদউদ্দিন দাবি করেছিলেন, রাজ্যে তাঁরা অন্তত ১৫টি জেলায় সংগঠন বিস্তার করেছেন। মিমের প্রভাব বৃদ্ধির কারণ হিসেবে তিনি এই অভিযোগও করেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল সরকার রাজ্যের মুসলিম তথা সংখ্যালঘুদের জন্য কিছুই করেনি। সংখ্যালঘুরা দেশের মধ্যে সব থেকে গরিব। তাঁদের রাজনৈতিক দলগুলি কেবলমাত্র ভোটব্যাঙ্ক হিসেবেই ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ তাঁদের। তাই তাঁদের সার্বিক উন্নতির জন্য তাঁরা বাংলার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। যদিও রাজ্যের শাসক বা বিরোধী দলগুলি মিমকে তেমন গুরুত্ব দিতে রাজি নয়। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেছেন, ‘বাংলায় মিমের কোনও প্রভাবই পড়বে না। এই রাজ্যে উর্দুভাষী মুসলিমদের সংখ্যা তেমন বেশি নয়। বাংলার মুসলিম ভাইরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বেই সুরক্ষিত আছেন। সকলের কাছে আমাদের অনুরোধ, আপনারা মিমকে প্রত্যাখ্যান করুন।’ রবিবার মুর্শিদাবাদের বড়োঞার কুলি মোড়ে তৃণমূলের এক জনসভায় নাম না করে মিম এবং বিজেপিকে আক্রমণ করে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‌বাংলার মানুষ কোনওদিন কোনও সাম্প্রদায়িক দলকে সমর্থন করেননি। সে মুসলিম সাম্প্রদায়িক দল হোক, বা হিন্দু সাম্প্রদায়িক দল হোক।’

একই ভাবে আসাদউদ্দিনের রাজ্য সফরকে গুরুত্ব দিতে চায়নি বিজেপিও। বাংলায় বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক‌ কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, ‘‌রাজ্যের ৫১ শতাংশ ভোটারের ওপর বিশ্বাস রেখে বিধানসভা নির্বাচনে লড়বে বিজেপি। বাকি ভোট নিয়ে কী দাঁড়াবে, তা আমি জানি না।’ দলের সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘এতদিন খান, ওয়াইসি, কুরেশিকে একা পকেটে নিয়ে ঘুরছিলেন। এখন ভোটের জন্য আর একজন এসে গিয়েছেন। আসতেই পারেন। যদিও এতে লাভ হবে না। কারণ, এ দেশে ভোট হয় গণতান্ত্রিক পথে। ২০২১ সালে রাজ্যে সরকার গড়ছে বিজেপিই। কোনও খান, কোনও ওয়াইসি, কোনও কুরেশি, কোনও ফুরফুরা শরিফ সরকার গড়তে পারবে না।‌’ সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘বাস্তব অবস্থা বোঝার জন্য ভোটের আগের সবাই চেষ্টা করছেন। আমাদের রাজ্যে বিভাজনের রাজনীতি শুরু হয়েছে। তার ভিত্তিতে দাঁড়িয়ে অনেকেই মনে করছেন, ধর্মভিত্তিক ঐক্য যাতে গড়ে তোলা যায়। সেটা রাজ্যের পরিপন্থী হবে। তাই আমরা বাম গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ সমস্ত শক্তিকে একজোট করার চেষ্টা করছি। মিমকে ব্যবহার করে বিজেপি এই রাজ্যে শক্তিশালী হতে চাইছে। কিন্তু ওরা শক্তিশালী হলে ফুরফুরাতে দৌড়োতে হত না।’

প্রকাশ্যে না বললেও রাজ্যে যে মিমের প্রভাব বেড়েছে, সে কথা অস্বীকার করতে পারেনি কোনও দলই। তবে মিমের প্রভাব বৃদ্ধি নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপি পরস্পরের বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে। কয়েক মাস ধরেই তৃণমূল দাবি করে চলেছে, রাজ্যে মুসলিম ভোট কাটতে মিমকে আমদানি করছে বিজেপিই। অন্যদিকে, বিজেপি পালটা দাবি করেছে, নিজেদের ক্ষমতাতেই জিতবে তারা। আবার সিপিএম দাবি করেছে, পশ্চিমবঙ্গে বিভাজনের রাজনীতির নোংরা খেলা শুরু করেছে তৃণমূল এবং বিজেপি, দুই দলই। তারই ফল এই মিমের আমদানি। এদিকে, কিছুদিন আগে মিম সূত্রে দাবি করা হয়েছিল, উত্তর দিনাজপুর, মালদহ, মুর্শিদাবাদ ছাড়াও ভারত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় তাদের শক্তি রয়েছে। এ ছাড়াও উত্তরবঙ্গের সীমান্তবর্তী এলাকাতেও তাদের প্রভাব রয়েছে। মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা ছাড়াও এই এলাকাগুলি অর্থনৈতিকভাবে অনগ্রসর বলেও দাবি করা হয়েছে মিমের তরফে। তথ্য বলছে, রাজ্যের ২৯৪ টি আসনের মধ্যে ১২০টি আসনে প্রার্থী জয়ের পিছনে নির্ণয়শক্তি হিসেবে কাজ করে থাকেন সংখ্যালঘুরা। সেই আসনগুলির মধ্যে অন্তত ৭০টি আসনে প্রার্থী দিতে চায় মিম।

রাজ্যের ১৫টি জেলায় এই আসনগুলি রয়েছে। এইসব জেলায় মুসলিমদের ভালো সমর্থন তাঁরা পাবেন বলে আসাদউদ্দিন জানিয়েছেন। সেনসাস রিপোর্ট অনুযায়ী উত্তর দিনাজপুরে ৫০ শতাংশ, মালদহে ৫৯ শতাংশ এবং মুর্শিদাবাদে ৬৬ শতাংশ মুসলিম সংখ্যালঘু ভোটার রয়েছেন। আবার, ভারত–বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও শেষ ৭ থেকে ৮ বছরে সংখ্যালঘু ভোটারের সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়েছে। ২০১১ সালে যেখানে এই দুই জেলায় সংখ্যালঘু সংখ্যা ছিল ৩০ শতাংশের মতো, সেখানে শেষ কয়েক বছরে বেড়ে হয়েছে ৪০ শতাংশের মতো।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..